ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল বাংলাদেশ

কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গ্যালারিতে বাংলাদেশের পাঁচটি পতাকা ও ঢোল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন একদল সমর্থক। ঢোলের বাড়ির সঙ্গে সারাক্ষণ ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’-গর্জনে স্টেডিয়াম মাতিয়ে রাখলেন তাঁরা।

দর্শকদের এমন সমর্থন পেয়ে মাঠেও এর প্রতিফলন দেখিয়েছেন মারিয়া মান্দা, শামসুন্নাহাররা। ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফের ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের গোলটি এসেছে পেনাল্টি থেকে। স্পটকিক থেকে বল জালে জড়িয়ে ফাইনালের পথে দলকে এগিয়ে দিয়েছেন ডিফেন্ডার শামসুন্নাহার।

আজ ভারতের বিপক্ষে জিতলেও বাংলাদেশের খেলায় ফুটবলীয় সৌন্দর্য ছিল না। ভারতও খেলতে পারেনি টুর্নামেন্ট ফেভারিটের মতো। মাঝমাঠ ব্যবহার না করে দুদলই লম্বা পাস খেলে সরাসরি আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। সেগুলো দানা বেঁধে ওঠার আগেই বিপদমুক্ত। শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলে বল বাতাসে বেশি থাকলে সে খেলা চোখের জন্যও খুব কষ্টকর। গোলটি ছাড়া বাংলাদেশের মাত্র দুটি গোলের সুযোগ পেয়েছিল। কয়েকবার বাংলাদেশের রক্ষণভাগে ঝাঁকুনি দিতে পারলেও গোলে ভারতের শট ছিল মাত্র একটি।

৬ মিনিটেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বক্সের মধ্যে তহুরা খাতুনকে ফাউল করেন ভারতীয় ডিফেন্ডার ক্রিতিনা দেবী। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে বল জালে জড়াতে কোনো ভুল করেননি অভিজ্ঞ লেফটব্যাক শামসুন্নাহার।
এরপর বল বাতাসেই উড়ল বেশি।

বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা লম্বা পাস দেওয়ার চেষ্টা করছেন, ভারতীয় ডিফেন্ডাররা বিপদমুক্ত করছেন। আবার ভারতের ক্ষেত্রেও তাই। ৩৭ মিনিটে মাঝমাঠের খানেকটা সামনে থেকে আঁখি খাতুনের দূর পাল্লার ফ্রিকিক জায়গায় দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভারতের গোলরক্ষক আনশিকা। গোলটির পর এই শটই ছিল বাংলাদেশের একমাত্র উল্লেখযোগ্য গোলের সুযোগ।

দ্বিতীয়ার্ধে গোল করার মতো তিনটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন ভারতীয় ফরোয়ার্ড সুমাতি কুমারি। ৫৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া সুমাতির শট বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার হাতে। ৬২ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটা নষ্ট করলেন সুমাতি। নিতু লিন্ডার থ্রুতে বাংলাদেশের দুই সেন্টারব্যাক আঁখি ও নিলুফার ইয়াসমিনের মধ্য দিয়ে বের হয়ে যান তিনি। গোল পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এসেছিলেন রুপনাও। সুমাতির টোকা সাইড পোস্ট ঘেষে বাইরে চলে যায়।

৭৩ মিনিটে আবারও সুমাতি। প্রতিআক্রমণ থেকে বাংলাদেশের ডিফেন্ডারের সামনে থেকে হেডে ছোঁ মেরে বল বের করে নিয়ে যান তিনি। বক্সের কাছাকাছি গিয়ে তালগোল পাকিয়ে বাইরে মারেন বল। এর মধ্যে ৫৭ মিনিটে ঋতুপর্ণা চাকমার কর্নার থেকে আঁখির হেড ফিস্ট করেন ভারতীয় গোলকিপার।

শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে গোলাম রব্বানীর দল। এ ম্যাচ ছিল ফাইনালের সমীকরণে এগিয়ে থাকার লড়াই। সেটি জিতে ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালের কাছাকাছি চলে গেছে। সমান ম্যাচে ভারত ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে নেপাল। তবে এ দুই দল এখনো মুখোমুখি হয়নি। পাঁচ দলের রাউন্ড রবিন লিগ টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দুটি দল খেলবে ফাইনালে। রবিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দুর্বল দল শ্রীলঙ্কা।

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন